অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে যে এনালাইসিস করা হয়ে থাকে তাকে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস বলা হয়। ট্রেডারা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে অর্থনৈতিক ডাটাগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে থাকে কারণ এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের দ্বারা কারেন্সিগুলো প্রভাবিত হয়ে থাকে তথা ফরেক্স মার্কেট প্রভাবিত হয় । শক্তিশালী অর্থনীতি সে দেশের কারেন্সির চাহিদা বৃদ্ধি করে । এর ফলে ব্যক্তি এবং ব্যবসায়িক দিকে থেকে সেই কারেন্সিতে ইনভেষ্টমেন্ট লেভেল বাড়তে থাকে ।
সুতরাং, যখন কোন প্রধান ইভেন্টে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার তুলনায় শক্তিশালী হয়েছে দেখায়, তখন ট্রেডাররা ভবিষ্যতে ওই কারেন্সিটার চাহিদা বৃদ্ধি পাবে ভেবে কিনতে থাকে । যদি প্রত্যাশার তুলনায় খারাপ আসে তাহলে ওই কারেন্সিটার চাহিদা হ্রাস পাবে ।
এখন দেখা যাক কিছু প্রধান অর্থনৈতিক ঘটনা যা মুদ্রার মূল্য পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে । এগুলো কিছু অর্থনৈতিক পরিভাষা মাত্র যা ফরেক্সে কম বেশী জড়িত ।
মোট দেশজ উৎপাদন (Gross Domestic Product-GDP): GDP হলো অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূচক । এর মান অর্থবছরের প্রতি তিনমাস পর প্রকাশ করা হয় যা প্রকাশের আগের তিন মাসের কাজের ফলাফল তুলে ধরে । GDP হলো গত তিনমাসে ঐ দেশের অর্থনীতিতে উৎপাদিত সকল পণ্য ও সেবার মোট মূল্যমান ।
Trade Balance: Trade Balance বলতে কোন দেশের সকল পণ্য ও সেবার আমদানি ও রপ্তানির পার্থক্যকে বোঝায় । কোন দেশের বিনিময়ের ভারসাম্য এবং আমদানি-রপ্তানির পরিবর্তন তাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির একটি বহুল ব্যবহৃত সূচক । রপ্তানির পরিমাণ আমদানি অপেক্ষা বেশী হওয়া উচিৎ । এতে অর্থনৈতিক উন্নতি এবং উৎপাদন ক্ষমতার বিকাশ ঘটে ।
Consumer Price Index (CPI) : CPI মুদ্রাস্ফীতি নির্ণয়ের সবচেয়ে ভাল নির্দেশক । এটি প্রতিমাসের ১৫ তারিখে প্রকাশিত হয় যা আগের মাসের চিত্র তুলে ধরে । এটি প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোগ্যপণ্যের ও সেবার মূল্যের মাসিক পরিবর্তন নির্দেশ করে ।
Producer’s Price Index (PPI) : PPI মুদ্রাস্ফীতি নির্ণয়ের আরেকটি সবচেয়ে ভাল নির্দেশক । এটি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রকাশিত হয় যা আগের মাসের চিত্র তুলে ধরে । PPI প্রতি মাসে পাইকারি ভাবে মোট উৎপন্ন পণ্যের মূল্য নির্দেশ করে । ফলে CPI দিয়ে আমরা বুঝি যে ভোক্তারা পণ্যের জন্য কি পরিমাণ খরচ করছে এবং PPI দ্বারা বুঝি যে ঐ পণ্যের জন্য উৎপাদনকারীরা কি মূল্য পাচ্ছে ।
কর্মক্ষমতার নির্দেশক (Employment Indicator) : প্রতি মাসে দেশের কর্মক্ষমতার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় । এতে বেকারত্বের হার (যে পরিমাণ জনশক্তি কাজে নিয়োজিত হতে পারছেনা), নতুন সৃষ্টি হওয়া চাকুরীর সংখ্যা, সাপ্তাহিক গড় কত ঘণ্টা কাজ হয়েছে, সাপ্তাহিক ঘণ্টা প্রতি গড় আয়ের বিবরণী দেয়া হয় । এই ঘোষণা বাজার পরিবর্তনে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে । NFP (Non- Farm Employment Report) এর কথা প্রায়ই ট্রেডারদের মুখে শোনা যায়, যা বাজারে গতিসৃষ্টিতে বিশাল ভূমিকা রাখে ।
দীর্ঘ-মেয়াদী পণ্যের বিক্রি (Durable Goods Orders) : এই বিবরণীতে হিসাব দেয়া হয় যে, দেশের মানুষ দীর্ঘ-মেয়াদী পণ্য ক্রয়ের জন্য কি পরিমাণ খরচ করছে । দীর্ঘ-মেয়াদী পণ্য বলতে যেগুলো ৩ বছর বা তার বেশি দিন টিকে তাদের বোঝায় । এটি প্রতি মাসের শেষ সপ্তাহে প্রকাশিত হয় যা উৎপাদন শিল্পের অবস্থা সম্পর্কে খুব উৎকৃষ্ট নির্দেশক হিসেবে কাজ করে ।
খুচরা বিক্রয়ের সূচক (Retail Sales Index) : এটি খুচরা বিক্রয়ের মাধ্যমে বিক্রিত মোট পণ্যের হিসাব নির্ণয় করে । এটি বিশাল পণ্য বিক্রয়ের ক্রমিক শৃঙ্খল থেকে শুরু করে মুদি দোকানের বিক্রি পর্যন্ত হিসাব করে । এতে দেশের মধ্যে খুচরা দোকানগুলোর থেকে নেয়া নমুনার মাধ্যমে হিসাব করা হয় । এটি প্রতিমাসে আগের মাসের তথ্য দ্বারা প্রকাশিত হয় ।
গৃহ-সংস্থান তথ্য (Housing Data) : গৃহ-সংস্থান তথ্য দ্বারা প্রতিমাসে তৈরিকৃত মোট গৃহের সংখ্যা ও আগের তৈরিকৃত গৃহের কেনা বেচার হিসাব প্রকাশ করা হয় । গৃহ নির্মাণ কার্যকলাপ দেশের অর্থনৈতিক বিকাশের অন্যতম উৎস । ফরেক্সে এই তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে দেখা হয় । গৃহ কেনাবেচার সংখ্যা অর্থনৈতিক অবস্থা পরিমাপের একটি দারুণ নির্দেশক । গৃহনির্মাণ ও কেনাবেচা কম হলে তা দেশের দুর্বল অর্থনীতির সঙ্কেত প্রকাশ করে ।
সুদের হার (Interest Rates) : সুদের হার ফরেক্স এর প্রধান চালিকা শক্তি । উপরে বর্ণিত অর্থনৈতিক সূচকগুলো কেন্দ্রীয় মুক্তবাজার কমিটি দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয় দেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি বোঝার জন্য । এরপর তারা সেই অনুযায়ী সুদের হার হ্রাস-বৃদ্ধি ও নিয়ন্ত্রণ করেন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অনুযায়ী । যদিও সুদের হার ফরেক্সের মূল্য পরিবর্তন এর মূল চালিকা শক্তি, তবুও বাকি নির্দেশকগুলোও যথেষ্ট প্রয়োজনীয় ।
Meetings of Central Banks on the Rate of Interest (কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার সংক্রান্ত মিটিং): এই ইভেন্টের মাধ্যমে আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার সংক্রান্ত তথ্যদি পেতে পারি। যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি করে, তখন সেই দেশের টাকা বিনিয়োগকারী অংশীদারগণ এই সুবিধা ভোগ করে থাকে । উচ্চ সুদের হারের ফলে ওই কারেন্সির চাহিদাও বেড়ে যায় । এবং ফরেক্স মার্কেটে ব্যপক একটা প্রভাব লক্ষ করা যায়।
Studies on Manufacturing (উৎপাদন) : এটি একটি দেশের উৎপাদন খাত বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে কি না তা নির্দেশ করে থাকে । দেশের উৎপাদেনের পরিমানের উপর নির্ভর করে বিনিময় হারে বড় ধরণের ওঠা নামা হতে পারে । Studies on Manufacturing এর মাধ্যমে আমরা কোন দেশের সামগ্রিক উৎপাদেনের একটি চিত্র পেতে পারি।
সফলতার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাকেই কারন কেউ কখনও কাউকে সফলতা এনে দিতে পারে না.. শুধুমাত্র সহযোগী হতে পারে। ফরেস্ক্র পেশায় আমাদের সফল
অনেকে প্রশ্ন করেন ভাই ট্রেডিংয়ে সফলতার মূলমন্ত্র কি? যদিও সফলতা অনেক দূর কিন্তু আমি আমার ছোট ট্রেডিং ক্যরিয়ারের আলকে বলতে পারি ট্রেডিং
ফরেক্স মার্কেটে যত ধরনের জনপ্রিয় এবং প্রফিটেবল ট্রেডিং সিস্টেম রয়েছে তার মধ্যে স্কাল্পিং(Scalping) ট্রেডিং সিস্টেম অন্যতম। খুব অল্প সময়ের ম
আসল Head & Shoulders Pattern প্রায়শই ঘটে না, কিন্তু যখন এটি তৈরি হয় তখন অনেক ট্রেডাররা এই প্যাটার্নকে মার্কেটে একটা বড় ধরনের ট্রেন্ড রিভারসেল (Reversal) প্
শুধুমাত্র ফরেক্স ট্রেডিং নয় জীবনের সকল স্তরে সফলতার জন্য প্রয়োজন লোভ থেকে দূরে থাকা। যারা লোভকে জয় করতে পারবে তাদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী স
মানুষ অভ্যাসের দাস তাই তার পূর্বের অভ্যাস বা অবেগগুলোকে সে খুব সহজেই ঝেড়ে ফেলতে পারে না। ফরেক্স ট্রেডিংয়ে লসের অন্যতম কারন হল এই আবেগগু
দীর্ঘদিন ধরে ফরেক্স মার্কেটে সফলতার সাথে টিকে আছেন এমন কিছু ট্রেডারের কাছে যদি প্রশ্ন করা হয়, ট্রেডিংয়ের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্
প্রায় ৮ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি, অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য নয় বরং নিজেকে একজন দক্ষ ট্রেডার হিসেবে তৈরি করাই হোক আপনার ট্রেডিংয়
এমন কি আছে যা শিখলে ফরেক্স মার্কেট আয়ত্তে আনা সম্ভব? আচ্ছা এমন কিছু কি আছে যা শিখলে ফরেক্স মার্কেটকে ভালোভাবে আয়ত্তে আনা সম্ভব হবে? এমন